সিম বন্ধের নতুন নিয়ম ২০২৫: কোন অপারেটরে কতদিন? বিটিআরসি'র নির্দেশনা

সিম বন্ধের নতুন নিয়ম ২০২৫: কোন অপারেটরে কতদিন? বিটিআরসি'র নির্দেশনা

📱 সিম বন্ধের নতুন নিয়ম ২০২৫: কোন অপারেটরে কতদিন পর সিম নিষ্ক্রিয় হবে? বিটিআরসি'র নির্দেশনা

বর্তমান ডিজিটাল বাংলাদেশে মোবাইল ফোন এখন শুধুমাত্র যোগাযোগের মাধ্যম নয়, বরং ব্যাংকিং, ব্যবসা, শিক্ষা, অফিসিয়াল ও পার্সোনাল লাইফের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠেছে। ফলে প্রতিটি মোবাইল নম্বর হয়ে উঠেছে ব্যবহারকারীর জন্য একটি ডিজিটাল পরিচয়

এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) সিম ব্যবহার না করলে কতদিন পর সেটি বন্ধ বা রিসাইকেল (পুনর্ব্যবহারযোগ্য) হবে— সে বিষয়ে ২০২৫ সালে একটি হালনাগাদ নির্দেশনা দিয়েছে।

ছবি সুত্র: https://web.facebook.com/mobileoperator


🧾 কেন এই নিয়ম চালু করা হয়েছে?

বিটিআরসি জানায়, দেশে ১১ ডিজিটের মোবাইল নম্বর সীমিত। একাধিক মোবাইল অপারেটরে কোটি কোটি নম্বর বরাদ্দ দেওয়া হলেও, এর একটি বড় অংশ দীর্ঘদিন অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে থাকে। ফলে নতুন গ্রাহকদের জন্য নম্বর সংকট দেখা দেয়।

এই পরিস্থিতি মোকাবিলায়, নিষ্ক্রিয় মোবাইল নম্বর রিসাইকেল করে পুনঃবরাদ্দ দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। কিন্তু অনেক গ্রাহক তাদের সিম বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণ এবং নির্ধারিত সময়সীমা জানেন না।


📊 কোন অপারেটরে কতদিন পর সিম বন্ধ হবে?

বিটিআরসি এবং মোবাইল অপারেটরদের তথ্য অনুযায়ী, নিচে অপারেটরভিত্তিক নিষ্ক্রিয়তার সময়সীমা তুলে ধরা হলো:

অপারেটরনিষ্ক্রিয়তার সংজ্ঞাবন্ধ বা রিসাইকেল হওয়ার সময়
রবি ও এয়ারটেলব্যালেন্স মেয়াদ শেষ + ব্যবহার না হওয়া১২ মাস নিষ্ক্রিয়তার পর
গ্রামীণফোন ও স্কিটোব্যালেন্স শেষ + কোনো কল, ডাটা বা এসএমএস না থাকলে১১ মাস নিষ্ক্রিয়তার পর
বাংলালিংকব্যবহার না হওয়া + ব্যালেন্স শেষ১৩ মাস নিষ্ক্রিয়তার পর
টেলিটকদীর্ঘমেয়াদে ব্যবহার না হলে১৪-১৫ মাস পর সিম রিসাইকেল হয়

⏱️ সর্বোচ্চ সময়সীমা কত?

বিটিআরসি সারা দেশের জন্য একটি সাধারণ নির্দেশনা দিয়েছে:

  • যদি কোনো সিম টানা ৪৫০ দিন অর্থাৎ ১৫ মাস কোনোভাবেই ব্যবহার না হয়, তবে সেটিকে নিষ্ক্রিয় হিসেবে চিহ্নিত করা হবে।

  • এরপর অপারেটর গ্রাহককে ৩০ দিনের সতর্কতা সময় দেবে। এই সময়ের মধ্যে সিমটি পুনরায় চালু বা ব্যবহার না করলে তা রিসাইকেল বা পুনর্ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করা হবে।

  • অর্থাৎ, মোট ৪৮০ দিন (প্রায় ১৬ মাস) নিষ্ক্রিয় থাকলে নম্বরটি স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যেতে পারে।


⚠️ কী কী ব্যবহারকে সক্রিয় ধরা হয়?

আপনার সিম সচল রাখতে নিচের যেকোনো একটি করলেই সিম নিষ্ক্রিয় ধরা হবে না:

  • ✅ রিচার্জ করা

  • ✅ ইনকামিং বা আউটগোয়িং কল করা

  • ✅ ডাটা প্যাক ব্যবহার

  • ✅ এসএমএস প্রেরণ বা গ্রহণ

  • ✅ ইউএসএসডি কোড ব্যবহার (যেমন: *247#, *121# ইত্যাদি)

  • ✅ মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (বিকাশ, নগদ ইত্যাদি) থেকে ট্রানজেকশন


❌ কী হবে যদি সময়সীমা পেরিয়ে যায়?

যদি আপনি উপরোক্ত ৪৮০ দিনের মধ্যে কোনো ধরনের ব্যবহার না করেন:

  1. সিমটিকে “ডিসকানেক্টেড” হিসেবে ঘোষণা করা হবে।

  2. পূর্বের মালিকানার অধিকার বাতিল হবে।

  3. সেই নম্বরটি নতুন কোনো গ্রাহককে বিক্রি করে দেওয়া হবে।

  4. আপনার ওই মোবাইল নম্বরের সাথে সংযুক্ত সকল অ্যাকাউন্ট (ব্যাংক, বিকাশ, ফেসবুক, ইমেইল) ঝুঁকিতে পড়বে।


✅ কী করলে সিম নিষ্ক্রিয় হবে না?

  • 🔋 অন্তত প্রতি ২ মাসে একবার রিচার্জ করুন

  • 📶 মাঝে মাঝে কল বা ইন্টারনেট ব্যবহার করুন

  • 🔁 অটো রিচার্জ/প্ল্যান চালু রাখলে ভালো

  • 📱 ফোনে সিমটি ঢুকিয়ে অন রাখুন, যদিও ব্যবহার না করেন

  • 🔔 কোনো জরুরি নোটিশ বা এসএমএস পেলে সাড়া দিন


📌 উপসংহার

এই নিয়মগুলো জানার মাধ্যমে আপনি আপনার গুরুত্বপূর্ণ মোবাইল নম্বর রক্ষা করতে পারবেন। শুধুমাত্র না ব্যবহার করার কারণে যেন আপনার গুরুত্বপূর্ণ নম্বরটি অন্য কারো কাছে চলে না যায়, সে বিষয়ে সতর্ক থাকুন।

বিশেষ করে যারা বিদেশে থাকেন, দীর্ঘ সময় সিম ব্যবহার করেন না, অথবা একাধিক সিম একসাথে চালান—তাদের জন্য এই নিয়মগুলো জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।


🔗 তথ্যসূত্র:

  1. বিটিআরসি অফিসিয়াল নোটিশ: www.btrc.gov.bd

  2. গ্রামীণফোন কাস্টমার কেয়ার: www.grameenphone.com

  3. বাংলালিংক হেল্প ডেস্ক: www.banglalink.net

  4. রবি অফিসিয়াল ওয়েবসাইট: www.robi.com.bd

  5. টেলিটক সাপোর্ট: www.teletalk.com.bd


📢 আপনার পরিবার, বন্ধু, আত্মীয়দের সাথেও এই তথ্য শেয়ার করুন। তাদের অনেকেই হয়তো জানেন না যে, তাদের সিম অচিরেই নিষ্ক্রিয় হতে পারে।

🔁 শেয়ার করুন, সচেতন হোন!

Post a Comment

0 Comments