হারিয়ে যাচ্ছে বুদ্ধিমান ও শিল্পী পাখি বাবুই

হারিয়ে যাচ্ছে বুদ্ধিমান ও শিল্পী পাখি বাবুই

মোঃ জহিরুল ইসলাম (লিটন পাঠান),
মাধবপুর (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি 

বাবুই পাখি গ্রাম বাংলার ছোট একটি পাখির নাম। এই পাখি যেমন বুদ্ধিমান তেমনি শিল্পীর মত অপরূপ তার কারুকাজ। বাবুই পাখি দেখতে অনেকটা চড়ুই পাখির মত, তবে আকারে একটু বড়। তারা ঝাঁক বেঁধে তাল গাছের চূড়ায় বসবাস করে। এরা খুব পরিশ্রমী পাখি। গ্রামগঞ্জে এই বাবুই পাখির আগের মত চোখে পড়ে না। 


বাবুই পাখিরে ডাকি, বলিছে চড়ুই, কুঁড়ে ঘরে থেকে কর শিল্পের বড়াই। আমি থাকি মহাসুখে অট্টালিকা পরে, তুমি কত কষ্ট পাও রোদ বৃষ্টি ঝড়ে। বাবুই হাসিয়া কহে সন্দেহ কি তাই, কষ্ট পাই তবু থাকি নিজের বাসায়। পাকা হোক তবু ভাই পরেরও বাসা, নিজ হাতে গড়া মোড় কাঁচা ঘর খাসা। 

রজনীকান্ত সেনের কবিতার সেই বাবুই পাখি আজ হারিয়ে যাচ্ছে। যার ফলে এখন আর আগের মত বাবুই পাখি দেখা যায় না। একশ্রেণীর লোক শিকার করছে বাবুই পাখি, অন্য দিকে খাঁচায় বন্দী করে বেচাকেনাও হচ্ছে এ পাখি। হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম গঞ্জের ঐতিহ্যবাহী বাবুই পাখির বাসা। বাবুই পাখিরা সাধারণত তাল গাছের চূড়ায় বাসা বাঁধে। এই বাবুই পাখির বাসা গ্রাম গঞ্জের একটি ঐতিহ্যবাহী দৃশ্য। বাবুই পাখি নিয়ে কবি সাহ্যিতিকরা অনেক গল্প ও কবিতা লিখেছেন। তাল গাছের পাতার নিচের অংশে বাবুই পাখি বাসা তৈরি করে। বাবুই পাখির বাসা বানানোর নির্মাণ শৈলী, কারিগরী দক্ষতা দেখে আধুনিক যুগের প্রকৌশলীরা ভাবিয়ে তোলে। তাল পাতার ছেড়া তন্তু দিয়ে তারা বাসা বাঁধে। পাতা ছিড়ে এনে সূক্ষ্মভাবে ঠোঁট দিয়ে তা গাঁথুনী করে বাসা তৈরী করে, তাই এর নাম শিল্পী বাবুই পাখি। ঝড় বৃষ্টিতেও সেই বাসা ভেঙ্গে পড়ে না। তাল পাতার বাসায় কোন ভাবেই পানি ঢোকে না। এ বাসায় প্রবেশ ও বাহির হওয়ার জন্য একাধিক দরজা রয়েছে, এ এক অদ্ভুত দৃশ্য। অন্ধকার ঘরকে কিভাবে আলোকিত করতে হয় তাও বাবুই পাখিরা ভাল ভাবে জানে। বাবুই পাখির বাসার ভিতর আধুনিক যুগের মত লাইটের ব্যবস্থা আছে। বাসার ভিতর একটু গোবর রাখা হয় তার ভিতরে জোনাকি পোকার মাথাটি ঢুকিয়ে দেয়। ফলে জোনাকির আলোতে বাসা আলোকিত হয়ে উঠে। গ্রাম গঞ্জের তাল গাছে এই বাবুই পাখির দেখে মেলে। এই দৃশ্য সাধারণ বাংলাদেশে প্রতিটি পল্লী গ্রামে দেখা যায়। 

মোঃ জহিরুল ইসলাম (লিটন পাঠান) 
মাধবপুর (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি 

Post a Comment

0 Comments